সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫

আমার গণসঙ্গীত শিক্ষক

ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘ শিলচর শাখার সভাপতি চিন্টু সেনের মরদেহ তখন শিলচরের শ্মশানের চুল্লিতে দাহ হচ্ছে। আমরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে আছি এদিকে ওদিকে। মুকুন্দকাকু ও গৌরাঙ্গদা দুজনে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একটি সিগারেট ভাগ করে খাচ্ছেন। আবাল্য বন্ধু দুজন এভাবেই সিগারেট খেতেন। চিন্টুদা‘র চিতা জ্বলছে। পাশের চুল্লিটা খালি। মুকুন্দকাকু আধ খাওয়া সিগারেটটা গৌরাঙ্গদাকে দিয়ে বললেন, গৌরাঙ্গ, ওই দ্যাখ, চিন্টুদার পাশের চুল্লিটা ফাঁকা। চল, দুজনে এখান থেকে রেস লাগাই। কে আগে ওখানে উঠতে পারে। গৌরাঙ্গদা সিগারেটে টান দিতে দিতে বললেন, তুই যা, আমি সিগারেটটা শেষ করে আসছি। ওদের দুই বন্ধুর কথোপকথন শুনে তখন আমরা হেসেছিলাম। সেদিনের কথাই সত্য হল। ২০০৭ সালের ৬ আগস্ট গৌরাঙ্গদা‘কে পেছনে ফেলে মুকুন্দকাকু চলে গেলেন। আজ ৮ বছর পর আগস্ট মাসেই গৌরাঙ্গদাও চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। সত্যি যদি ওরকম একটা দেশ থাকত। তবে এতক্ষণে মুকুন্দকাকু তাঁর হাতের জ্বলন্ত সিগারেটটা গৌরাঙ্গদার হাতে তুলে দিয়ে বলছেন, অত দেরি করলে কেনে ব্যাটা!


সত্যি ভীষণ শূন্য লাগছে। ২০০৭ সালে শিলচর ছেড়ে যাবার পর থেকে যখনই যত কম সময়ের জন্যেই শিলচরে এসেছি, তখণই একটি কর্মসূচি আমার বাঁধা ছিল। কিষাণকে ডেকে বলতাম, চল সবার সাথে একবার দেখা করে আসি। কিষাণও জানত আমার কর্মসূচি। স্কুটারে আমাকে পেছনে বসিয়ে তার স্কুটার প্রথমে ছুটত বিটি বলেজের উল্টোদিকে ‘স্মরণ‘ বাড়িটায়। দরজা খুলে ভেতরে স্বাগত জানাতেন অনন্তকাকু, অনন্ত দেব। খানিকক্ষণের মধ্যেই তাঁর সাথে শুরু হতো আমার নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক। সত্য কথা বলতে কি, আমার আর অনন্তকাকুর, একজনের শ্রদ্ধা আর আরেকজনের স্নেহের প্রকাশটাই ছিল উচ্চস্বরে তর্কাতর্কিটা। সেটা সেরেই দ্বিতীয় গন্তব্য, হসপিটাল রোড থেকে বাঁয়ে অম্বিকাপট্টির দিকে মোড় নিয়ে লোহার গেট। কলিং বেল টিপে ভেতরে ঢুকে অনুরূপাদির সাথে দেখা করা।  বামরাজনীতি, বরাকের ভাষা চেতনা, ইতিহাস থেকে শুরু করে অতীতের স্মৃতিচারণ কত কত কথা। এরপরের গন্তব্য কিষাণ জানে সেন্ট্রাল রোড। বিশাল বাড়ির এ ঘরে ও ঘরে ঢুকে আনুপিসির খোঁজ, কোণের ঘরে গিয়ে মঙ্গলাপিসির পাশে খানিকক্ষণ বসা। একটু কথা বলা। চা খাওয়া।


তারপরই স্কুটারের শেষ গন্তব্য আর্যপট্টি। গৌরাঙ্গদার বাড়ি। যতদিন সুস্থ ছিলেন। গৌরাঙ্গদার ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হল গানের কথা। পুরোনো কোনো গান পাচ্ছেন না। সুর মনে আছে, কথা মনে নেই। আমাকে বলতেন কলকাতা গণনাট্য অফিসে গিয়ে যেন ওই গানের বাণীর খোঁজ করি। একটু একটু করে এই গন্তব্যের সংখ্যা শেষ হয়ে আসছে। দলছুট-এর ডাকে শেষ শিলচর গিয়ে গৌরাঙ্গদার কাছে গিয়েছি। খুবই অসুস্থ। থুতনিতে একটু একটু দাড়ি, গালেও হালকা দাড়ির ছোঁয়া। দেখতে অবিকল ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ যেন। কানে একটু কম শুনছেন। বললেন, প্রসাদের অনুষ্ঠানটা খুব ভালো হচ্ছে। তারপরই জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ছেলে মেয়েরা আসে নি? বললাম, এসেছে। ‘ওদের নিয়ে এসো‘। এই কথাটাই এখন খুব বেশি কানে বাজছে, কারণ ওদের নিয়ে আর যাওয়া হয় নি।


গত শতকের আটের দশকে আমি ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাম রাজনীতিতে আসি। সভাসমিতিতে গান গাইতে বলা হত। গণসঙ্গীত তো জানি না। তখন শিলচরে গণসঙ্গীতের চর্চাও কিছুটা ম্লান হয়ে গেছে। মে দিবসের সময় দেখতাম কয়েকজনকে নিয়ে এক প্রৌঢ় গণসঙ্গীত গাইছেন সভার আগে। তিনি পেছনের সারিতেই থাকতেন, গলা শোনা যেতো না। পরে আলাপ হল। তিনিই গৌরাঙ্গদা। এর কিছুদিন পর শিলচরে ‘দিশারী‘র প্রতিষ্ঠা হল। গৌরাঙ্গদা গণসঙ্গীত শিখিযে দিতেন। এভাবেই শুরু তাঁর কাছে গণসঙ্গীত শেখা। পরে ‘দিশারী‘ ছেড়ে দিলেন গৌরাঙ্গদা। তখন আমি গৌরাঙ্গদা দুপুরে চেম্বার থেকে বাড়িতে ভাত খেতে যখন যান সেই সময়টায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে নানা গণসঙ্গীত তুলতাম। ‘দিশারী‘তে তখন পুরোনো গণসঙ্গীত যত গাওয়া হত, তার নব্বুইভাগ গৌরাঙ্গদার কাছ থেকে তোলা। সলিল চৌধুরীর ‘ও মোদের দেশবাসীরে‘ থেকে শুরু করে নানা গান ‘হো সাবধান আয়া তুফান‘ ‘অব মচল উঠা হ্যায় দরিয়া‘ ‘ইসবার লড়াই লানেওয়ালে‘ কত কত গান। পরে আমরা ‘পূর্বাভাস‘ নামে একটি সংগঠন করার চেষ্টা করেছিলাম। দুয়েকটা অনুষ্ঠান আর কিছুদিন রিহার্সেলের পর সেই দলটিকে আর টিকিয়ে রাখা গেল না। সেখানেও গান শেখাতেন গৌরাঙ্গদা। ‘হারাবার কিছু ভয় নেই‘ ‘সে আমার রক্তে ধোয়া দিন‘। তখন গৌরাঙ্গদার বড়ো ছেলে গৌতমদা (বাবা ছেলে দুজনকেই দাদা বলে ডাকাটা আমাদের বামপন্থী মহলে একসময়ে খুবই চালু ছিল) উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। সেখানে পড়ার সময় সে যুক্ত ছিল গণনাট্যের উত্তরধ্বনি শাখার সাথে। গৌতমদা শিলচর এল যখন তখন সিটুর উদ্যোগে চা মজদুর সমিতির প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। সেই প্রতিষ্ঠা সভায় গাওয়ার জন্যে গৌতমদা আমাদের শিখিয়েছিল ‘চা বাগিচার কলি ওই‘ এবং ‘সুনো ও কুম্পানি লোগ‘ গান দুটি।


আমি বর্ধমান থেকে পড়াশুনা শেষ করে শিলচর ফিরে দেখলাম গণনাট্য পুনর্গঠিত হয়েছে। ইতিমধ্যে মুকুন্দকাকু লখনউ থেকে অবসর নিয়ে ফিরে এসেছেন। গণনাট্যের পুরনো সময়ের মুকুন্দকাকু, গৌরাঙ্গদা, বিজুদা, ফণীদা, পল্টুদা, পলুদা, জিসুদা, মিলনদা, ওঁদের এবং আমাদের সকলের মাথার ওপর অভিভাবকস্বরূপ চিন্টুদাকে নিয়ে আমাদের গণনাট্যের কাজ শুরু হল পুরোদমে। আমাদের অনুজদের এক বড়ো দল এবং প্রবীণদের সঙ্গে পেয়ে গণনাট্যের কাজে বান ডাকল। নানা ধরনের অনুষ্ঠান। একের পর এক ব্যালে পরিবেশিত হল ‘অপারেশন ব্রহ্মপুত্র‘ ‘এক পয়সার ভেঁপু‘ ‘দুই বিঘা জমি‘ ‘ইরাবত সিংহ‘। কিছুদিন পর পরের প্রজন্মের গণনাট্য কর্মী জয়ের উদ্যোগে আমরা করলাম ‘আফ্রিকা‘ এবং আরো অন্যান্য ব্যালে। একের পর এক গান লিখছে প্রসাদ হৃষিকেশ। গণনাট্যের কর্মকাণ্ডের শেষ নেই। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে রয়েছেন গৌরাঙ্গদা। কিন্তু কোথাও তাঁকে সোচ্চারে দেখা যেত না। তিনি বরাবরই অন্যকে ঠেলে দিয়ে নিজে পেছনের সারিতে।


সম্ভবত চুরানব্বুই পচানব্বুই সালে আমরা ‘গণনাট্য - একাল ও সেকাল‘ বলে একটি অনুষ্ঠান করার উদ্যোগ নিই। তখন জেলা গ্রন্থাগার বন্ধ। শহরে একমাত্র প্রেক্ষাগৃহ আরডিআই হল। মুকুন্দকাকু একালের শিল্পীদের নিয়ে তৈরি করলেন কিছু অবিস্মরণীয় নৃত্য প্রযোজনা। আবার তিনিই মহা উৎসাহে নেমে পড়লেন তাঁদের যুগের বন্ধুদের দিয়ে অনুষ্ঠান করার। ঢাকাই পট্টিতে পল্টুদার বাড়িতে মহড়া বসল। আমাকে যেতেই হবে। হারমোনিয়াম ধরার জন্যে। ঘরে প্রবীণদের ভিড়। মুকুন্দকাকু, গৌরাঙ্গদা, বিজুদা, পল্টুদা, জিসুদা, মিলনদা, নীলুদা, পলুদা, ফণীদা। পল্টুদার কাঠের দোতলায় আসর সরগরম। বন্ধুরা ভুলেই যাচ্ছেন, পাশে তাঁদের সন্তানসম একজন বসে আছেন। হাসি ঠ্ট্টা রসিকতায় যেন ফিরে গেছেন তাঁদের যৌবনে। দেখা গেল মুকুন্দকাকুর সব গানের বাণী মুখস্থ। গৌরাঙ্গদার সুর স্মৃতিতে জীবন্ত। ‘রাজমিস্ত্রির গান‘ তাঁদের পুরনো প্রযোজনা। ফণীদা নাচবেন। সঙ্গে গান গাইবেন পল্টুদা ও গৌরাঙ্গদা। আমি হারমোনিয়ামে, তবলায় প্রসাদ। রিহার্সেলে পল্টুদা গৌরাঙ্গদা দুজনে গলা মিলিয়ে গান গাইলেও স্টেজে উঠে গৌরাঙ্গদা শুধু মাথা নেড়েই গেলেন। সামনে মাইক রয়ে গেল অব্যবহৃত। পল্টুদা একাই গেয়ে গেলেন। অনুষ্ঠানের পর আমি গৌরাঙ্গদাকে বললাম, এ কী করলেন। আপনি গলা ছাড়লেনই না কেন? এত সুন্দর করে দুজনকে দুটো মাইক দিলাম। উনি আমাকে উল্টে বুঝিয়ে দিলেন, আরে পল্টুকে দিয়ে গানটা গাইয়ে নিলাম। এটাই তো অ্যাচিভমেন্ট। আমি হতবাক!


গৌরাঙ্গদাকে নিয়ে অসংখ্য স্মৃতি। মুকুন্দকাকু ও গৌরাঙ্গদা আবাল্য বন্ধু। এক পাড়ার ছেলে। একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়েছেন। এতটাই বন্ধু যে বুড়ো বয়সেও যৌবনের অভ্যেসে একই সিগারেট দুজনে ভাগাভাগি করে খেতেন। মুকুন্দকাকুর যত গুরুতর অসুখই হোক, তিনি গৌরাঙ্গদা ছাড়া আর কোনো ডাক্তারের ওষুধ খাবেন না। শেষ বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বোধহয় প্রথম মুকুন্দকাকু গৌরাঙ্গদা ছাড়া অন্য কারো ওষুধ খেয়েছেন। মুকুন্দকাকু কখনোই গৌরাঙ্গদাকে গিয়ে ওনার অসুস্থতার বিবরণ দিতেন না। গিয়ে বলতেন, গৌরাঙ্গ, দিলা। গৌরাঙ্গদাও অসুস্থতার বৃত্তান্ত না শুনেই ওষুধ দিতেন এবং মুকুন্দকাকুও সুস্থ হয়ে উঠতেন। আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কী করে বোঝেন ওনার কী হয়েছে। হেসে বললেন, ওর তো জ্বর আর পেট খারাপ ছাড়া কিছু হয় না। জ্বর হয়েছে কি না দেখলেই বোঝা যায়। যখন দেখি জ্বর না, তখন বুঝি যে পেট খারাপ হয়েছে। এই ওষুধ আনার একটি ঘটনা নিয়ে একবার মুকুন্দকাকু ও গৌরাঙ্গদার মধ্যে মনোমালিন্য হয়ে গেল কিছুদিনের জন্যে। কেউ কারো সাথে কথা বলেন না। আমরা পড়লাম মহা মুশকিলে। দুজনেই দুজনের নামে আমাদের কাছে নালিশ করেন। অত বয়োজ্যেষ্ঠদের বিচার তো আর আমরা করতে পারি না। অগত্যা আমরা সভাপতি চিন্টুদাকে গিয়ে বললাম সমস্যার কথা। সব শুনে চিন্টুদা বললেন, দেখছি। বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে হারামজাদাদের। একদিন বিকেল চারটের সময় গৌরাঙ্গদা ও মুকুন্দকাকু, দুজনেরই ডাক পড়ল চিন্টুদার বাড়িতে। কেউই জানেন না, ওই একই সময়ে যে অন্যজনকেও ডেকেছেন চিন্টুদা। আমি আর প্রসাদ ভয়ে ভয়ে সেন্ট্রাল রোডে অপেক্ষা করছি, কী হবে এই বিচারসভার। হঠাৎ দেখি একই রিক্সা করে নতুনপট্টির দিক থেকে ফিরছেন মুকুন্দকাকু ও গৌরাঙ্গদা। মুকুন্দকাকু তার আধ খাওয়া সিগারেটটা বাড়িয়ে দিচ্ছেন গৌরাঙ্গদার দিকে। আমাদের আনন্দের আর সীমা নেই। পরে চিন্টুদাকে জিজ্ঞেস করলাম, কী করে ঝগড়া মেটালেন। চিন্টুদা বললেন, ঝগড়া মেটানো? আমার সামনে দুজনে দুজনকে দেখে অবাক! বুঝেছে আমি রাগ করেছি। বললাম, এই হারামজাদা। ন্যাংটো বয়স থেকে দুজন বন্ধু। এক বিড়ি দুজনে ভাগ করে খাস। তোদের ভীমরতি হয়েছে? যা, এক রিক্সায় করে বিড়ি ভাগাভাগি করে খেতে খেতে যা। বলে বিদায় করে দিলাম। দুজনে সুড়সুড় করে বেরিয়ে এলেন চিন্টুদার বাড়ি থেকে। বেরিয়ে একটা রিক্সায় চেপে একজন আরেকজনকে বললেন, সিগারেট আছে? ঝগড়া মিটে গেল।



এই কথাটা আজ মনে পড়ছে বারবার। তখন শহরটাও ছিল অন্য রকম। সমাজবন্ধন বলে একটা সংস্কৃতি ছিল সব কিছুর উর্ধে। চিন্টুদা শুধু সংগঠনের মাথা ছিলেন না। ছিলেন পাড়ার শহরের অভিভাবক। রাজনীতির মতপথ যাই হোক। একজন আরেকজনের সাথে সামাজিক আত্মীয়তার বন্ধনে বাঁধা ছিল। চিন্টুদার মৃত্যুর পর একই ভাবে শূন্যতা অনুভব করেন নূরুল হুদা এবং সন্তোষ মোহন। এই কথাগুলি আমি এখন যেখানে বাস করি সেখানে গল্পকথার মত শোনাবে। জানি না. গৌরাঙ্গদাদের সময়ের সংস্কৃতি কতটা বেঁচে আছে শিলচরে এখনও। তবে অনেককিছুই নেই। গোপেনদা দিগেনদা রুক্মিণীদার কমিউনিস্ট পার্টিও নেই, চিন্টুদা, মুকুন্দকাকু, গৌরাঙ্গদাদের গণনাট্যও আর রইল না। আমরা উত্তরসূরীরা তাঁদের পতাকা যথাযথভাবে কাঁধে তুলে নিতে পারি নি, এটা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা অন্তত আমার নেই। এবার উনিশে মে’র পর শিলচর থেকে ফিরে উল্টেপাল্টে দেখছিলাম ডানার কম্পিউটারে। হঠাৎ একটা ছবিতে চোখ আটকে গেল। গান্ধীবাগের শহীদ বেদির সামনে সেতু থেকে গৌরাঙ্গদাকে হাত ধরে নামতে সাহায্য করছে কমলেশ মিঠু। কেমন মনে হল, তিনি যেন তাঁর গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন, সে জন্যে হাত বাড়িয়েছে মিঠু। একটু আগে ওয়াটস অ্যাপে গৌরাঙ্গদার শেষযাত্রার ভিডিও আপলোড করেছে রাজীব। দেখলাম, ফুল আর রক্তপতাকা আচ্ছাদিত গৌরাঙ্গদার মরদেহ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শকট। পেছনে ভেসে আসছে মিঠুর কন্ঠস্বর, বাদলধারা হল সারা বাজে বিদায় সুর। গণনাট্য আন্দোলনের বিগত যুগের শেষ বাতিটাও নিবে গেল। মাথার ওপর এখন শুধু শূন্যতা। উত্তরযুগের আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি কি?

৩টি মন্তব্য:

  1. আমি জানিনা উনার সাথে পরিচয় হয়েছিল কিনা। শুভর সাথে কখনও উনার বাড়ি গেছি কিনা, মনে পড়েনা। বাকি সকলের বাড়ি শুভর সাথে গেছি। লেখাটা মনটাকে বেশ নাড়িয়ে দিল।

    উত্তরমুছুন
  2. আমি জানিনা উনার সাথে পরিচয় হয়েছিল কিনা। শুভর সাথে কখনও উনার বাড়ি গেছি কিনা, মনে পড়েনা। বাকি সকলের বাড়ি শুভর সাথে গেছি। লেখাটা মনটাকে বেশ নাড়িয়ে দিল।

    উত্তরমুছুন
  3. আপনার কলমের গুণে সব লেখাই মনগ্রাহী। এই রচনাটিও অন্তর ছুঁয়ে গেল। শুধু গৌরাঙ্গদার পুরো নামটা জানতে পারলে ভালো লাগত।

    উত্তরমুছুন